সদকায়ে জারিয়া


 

সদকায়ে জারিয়া

  

 


রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,

“মানুষ যখন মৃত্যুবরণ করে, তখন তার সমস্ত আমল বন্ধ হয়ে যায়। শুধুমাত্র তিনটি আমল মৃত্যুর পরও বাকী থাকে (এবং সেইগুলোর সওয়াব আমলকারীর কবরে পৌঁছানো হয়)। সেইগুলো হচ্ছে

(ক) সদকায়ে জারিয়া,

(খ) উপকারী জ্ঞান এবং,

(গ) এমন নেক সন্তান, যে তার জন্য দোয়া করবে।”

সহীহ মুসলিমঃ ১৬৩১, তিরমিযীঃ ১৩৭৬।

________________________________

হাদীসটি সম্পর্কে প্রয়োজনীয় কিছু কথাঃ

(ক) “সদকায়ে জারিয়া” কথাটির অর্থ হচ্ছে এমন দান বা সাদাকাহ, যার সুফল অব্যাহত থাকে। যেমন মসজিদ, মাদ্রাসা, হাসপাতাল, রাস্তা ইত্যাদি নির্মাণ কাজে অংশগ্রহণ করা বা সাহায্য করা।

(খ) “উপকারী জ্ঞান” যেমন মানুষের মাঝে উপকারী জ্ঞান বিতরণ করা, বই প্রকাশ বা প্রচার করা, দ্বীন শিক্ষার্থীদের খচর চালানো ইত্যাদি, যার ফলে মৃত্যুর পরও তার জ্ঞানের মাধ্যমে অন্য মানুষের উপকার অব্যাহত থাকে।

________________________________

রাসুলুলাহ সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম আরো বলেছেন, “এমন সাতটি জিনিস রয়েছে, যা বান্দার মৃত্যুর পরে কবরে থাকা অবস্থাতেও তার জন্য সওয়াব জমা করতে থাকেঃ

(১) এমন ব্যক্তি যাকে সে শিক্ষা দিয়েছে,

(২) যেই খাল সে খনন করেছে,

(৩) যেই কূপ সে নির্মাণ করেছে,

(৪) যেই খেজুর গাছ সে রোপন করেছে,

(৫) যেই মসজিদ সে নির্মান করেছে,

(৬) যেই ক্বুরআন সে দান করেছে এবং

(৭) এমন সন্তান, যে সেই বান্দার মৃত্যুর পর তার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে।”

আল-বাজ্জারঃ ৭২৮৯, শায়খ আলবানী হাদীসটিকে হাসান বলেছেন, জামি আস-সাগীর।

________________________________

এই হাদীস সম্পর্কে প্রয়োজনীয় কিছু কথাঃ

(২+৩) অন্য সহীহ হাদীসে রয়েছে মানুষের মাঝে পানি বিতরণ করার জন্য পানির উৎস যেমন কুয়া বা পুকুর খনন করা শ্রেষ্ঠ সাদাকাহ সমূহের একটি। যেহেতু বর্তমান যুগে এইগুলোর প্রচলন কম, তাই বর্তমান যুগে এইগুলোর পরিবর্তে নলকূপ, পানির মটর বা ফিল্টার বিকল্প বলে গণ্য হবে।

________________________________

(৪) হাদীসে নির্দিষ্টভাবে খেজুর গাছের কথা বলা হলেও, আম, জাম, কাঁঠাল, এমন যে কোন ফলদায়ক গাছ লাগানো সাদকায়ে জারিয়ার অন্তর্ভুক্ত এবং তার জন্য অনেক বড় সওয়াব রয়েছে। কোন ব্যক্তির লাগানো ফলের গাছ থেকে ফল কোন পাখি খেলে, কোন মানুষ খেলে, কোন মানুষ বা পশু এর ছায়ায় বসলে, এই সবগুলো গাছের রোপনকারী ব্যক্তির জন্য সাদাকাহ হিসেবে কবুল হবে।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url